যে কারণে ব্যাংক এশিয়া ইসলামিক ব্যাংকিং বাংলাদেশের অন্যান্য ইসলামিক ব্যাংকিং এর চেয়ে অনন্য
সমস্ত প্রশংসা পরম করুণাময় আল্লাহ্‌ তায়ালার জন্য, যার অশেষ রহমতে ব্যাংক এশিয়া ইসলামিক ব্যাংকিং এক যুগের মাইলফলকের সন্নিকটে। ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে যাত্রা শুরুর সন্ধিক্ষণ থেকেই ব্যাংক এশিয়ার ইসলামিক ব্যাংকিং এদেশের ইসলামপ্রিয় গ্রাহকদের প্রত্যাশা পূরণে শরীয়াহর সর্বোচ্চ অনুশীলন নিশ্চিত করাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে আমানত সংগ্রহ ও বিনিয়োগ প্রদানসহ সব ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। পথপরিক্রমায় ব্যাংক এশিয়ার ইসলামিক ব্যাংকিং ‘মুদারাবা হজ সেভিংস স্কিম, স্কুল ব্যাংকিং হিসাব ‘স্মার্ট জুনিয়র সেইভার’, ‘ক্যাশ ওয়াক্বফ’ হিসাব সহ বেশ কিছু ইউনিক বা অনন্য ডিপোজিট সেবার প্রবর্তন করেছে। এছাড়াও ২০১৩ সাল থেকে হজযাত্রীদের ব্যাংকিং সেবা কার্যক্রম ব্যাংকের ইসলামিক ব্যাংকিং থেকে পরিচালিত হচ্ছে।
ব্যাংক এশিয়া ইসলামিক ব্যাংকিং ৫টি ইসলামিক ব্যাংকিং উইন্ডো ছাড়াও অনলাইনের মাধ্যমে ব্যাংকের সকল শাখা ও এসএমই সেন্টার ইসলামিক ব্যাংকিং সেবার আওতায় রয়েছে। এর পাশাপাশি এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবস্থার অধীনে প্রবর্তিত ইসলামিক এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা আজ সারা দেশব্যাপী সম্প্রসারিত হয়েছে। অর্থাৎ ব্যাংক এশিয়ার যে কোন শাখা কিংবা এজেন্ট আউটলেটে সাধারণ ব্যাংকিং এর পাশাপাশি ইসলামিক ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করা যায়।

তবে যে বিষয়টি ব্যাংক এশিয়া ইসলামিক ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে বাংলাদেশের অন্য যে কোন ইসলামিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার এর চেয়ে একেবারেই আলাদা করেছে তা হচ্ছে ‘আইএসআর’ (ISR) বা ‘ইনকাম শেয়ারিং রেশিও’ (Income Sharing Ratio) পদ্ধতি। ২০০৮ সাল থেকেই ডিপোজিটরদের সাথে মুনাফা ভাগাভাগির লক্ষ্যে ‘ইনকাম শেয়ারিং রেশিও’ বা ‘আইএসআর’ পদ্ধতি বাংলাদেশে সর্বপ্রথম প্রবর্তনের মাধ্যমে ব্যাংক এশিয়া বাংলাদেশের ব্যাংকিং ইতিহাসে এক বিশেষ স্থান দখল করে নিয়েছে।

‘আইএসআর’ (ISR) বা ‘ইনকাম শেয়ারিং রেশিও’ (Income Sharing Ratio) পদ্ধতিঃ

‘ইনকাম শেয়ারিং রেশিও’ (ISR) মুদারাবা আমানতকারীদের আয় বণ্টনের এমন একটি অনন্য ব্যবস্থা যেখানে আয়ের অনুপাত সরাসরি ব্যাংকের বিনিয়োগ আয়ের উপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ এই পদ্ধতির অধীনে আমানতকারীদের জন্য পূর্ব নির্ধারিত কোন ধার্যকৃত রেট থাকে না, যা সম্পূর্ণরূপে শরীয়া সম্মত একটি পদ্ধতি। এক্ষেত্রে লাভের অনুপাত হিসাব করা হয় প্রতিমাসের বিনিয়োগ আয়ের উপর । উদাহরণস্বরূপ, আইএসআর রেশিও – আমানতকারী / ব্যাংক = ৭০ : ৩০ এর অর্থ হচ্ছে আমানতের বিনিয়োগের লাভের ৭০% অংশ পাবে আমানতকারী আর ৩০% অংশ পাবে ব্যাংক । আর মাসিক লভ্যাংশ হিসাব করা হবে প্রকৃত বিনিয়োগের আয়ের উপর ভিত্তি করে, যেটি প্রতি মাসে পরিবর্তনশীল। (এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে এবং প্রতি মাসের প্রফিট রেট সম্পর্কে ধারণা পেতে ক্লিক করুন – http://bit.ly/2kFvYWH )

ব্যাংক এশিয়া ইসলামিক ব্যাংকিং এর আরও কিছু অনন্য বৈশিষ্ট্যঃ

  • ব্যাংক এশিয়ায় রয়েছে অত্যন্ত অভিজ্ঞ এবং দক্ষ্য শরীয়াহ সুপারভাইজরি কমিটি, যেটি অভিজ্ঞ ইসলামিক “ফাকিহ” (ইসলামিক আইনশাস্ত্র বিশেষজ্ঞ), পেশাজীবি এবং শিক্ষাবিদ দ্বারা গঠিত
  • শরীয়াহ সম্মত আমানত সংগ্রহের নীতিমালা
  • ইসলামিক ব্যাংকিং বিভাগের জন্য আলাদা অর্থায়ন ও হিসাব বিভাগ এবং ইসলামিক ব্যাংকিং বিভাগের জন্য আলাদা আর্থিক প্রতিবেদন
  • ইসলামিক ব্যাংকিং এর পৃথক কর্পোরেট বিভাগ এবং ইসলামিক উইন্ডো এর জন্য পৃথক মানব সম্পদ
  • ইসলামিক ব্যাংকিং পরিচালনার জন্য পৃথক সফটওয়্যার “হিকমাহ” যার মাধ্যমে তাৎক্ষণিক অনলাইন ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালিত হয়
  • ব্যাংক এশিয়া ইসলামিক ব্যাংকিং বাংলাদেশে ইসলামিক উইন্ডো ভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার অগ্রদূত
  • ব্যাংক এশিয়া ইসলামিক ব্যাংকিং বাংলাদেশে “মুশারাকা” বিনিয়োগ ব্যবস্থার অগ্রদূত
  • এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমেও ইসলামিক ব্যাংকিং সেবা নেয়া যায় বিধায় বাংলাদেশের যে কোন প্রান্ত থেকেই ব্যাংকিং এর সুবিধা

আমানত সংগ্রহের নীতিমালাঃ

ব্যাংক এশিয়া ইসলামিক ব্যাংকিং এ শরীয়া সম্মত দুটি উপায়ে আমানত সংগ্রহ করা হয় । এর একটি হচ্ছে আল-ওয়াদিয়াহ পদ্ধতি এবং অপরটি হচ্ছে মুদারাবা পদ্ধতি।

আল-ওয়াদিয়াহ শব্দের অর্থ হচ্ছে আমানত । আল-ওয়াদিয়াহ পদ্ধতিতে ব্যাংক আমানতকারীর আমানত সংগ্রহ করে এবং আমানতকারীর অনুমতিক্রমে শরীয়াহ সম্মত পদ্ধতিতে ব্যাংক এই আমানত ব্যবহার করতে পারে। এক্ষেত্রে ব্যাংক আমানতকারীর চাহিদা সাপেক্ষে আমানত ফেরত দিতে বাধ্য থাকে। সাধারণত এই পদ্ধতিতে আমানতকারী কোন প্রকার লভ্যাংশ গ্রহণ করতে পারে না। ব্যাংক এশিয়া ইসলামিক ব্যাংকিং এ “আল-ওয়াদিয়াহ কারেন্ট একাউন্ট” এই পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়।

অপরদিকে মুদারাবা পদ্ধতিতে আমানতকারী তার আমানত ব্যংকে রাখে এবং ব্যাংক সেই আমানত শরীয়াহ সম্মত উপায়ে বিনিয়োগ করতে পারে কিন্তু এক্ষেত্রে আমানতকারীও বিনিয়োগের ঝুঁকির অধীনে থাকে। আমানতের বিনিয়োগ হতে প্রাপ্ত লাভ বণ্টন হয় আমানতকারী এবং ব্যংকের মধ্যে (ISR – ইনকাম শেয়ারিং রেশিও পদ্ধতিতে)। এই পদ্ধতিতে আমানতকারী সংজ্ঞায়িত হয় “রাব-আল-মাল” হিসেবে এবং ব্যাংক সংজ্ঞায়িত হয় “মুদারিব” হিসেবে।

(ব্যাংক এশিয়া ইসলামিক ব্যাংকিং এর বিভিন্ন ডিপোজিট একাউন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন – https://bit.ly/2HJLzQa )

Share and Enjoy !

Shares